৭ মে, ২০২৪
এখানে আসবে না কেউ
এখানে আসবে না কেউ

চেক - হ্যালো টেস্টিং - শুনতে পাচ্ছেন? শুনুন

জানালা দিয়ে হাওয়া ঢুকে গেল। ক্যালেন্ডারটা উড়ছে। দেওয়ালে ঘষটানির একটা শব্দ। পুরোনো বছর উড়ছে। আমি ৩১শে ডিসেম্বরে এসেই থমকে গেছি। বাইরে নতুন বছর চলছে, আমি পুরোনো বছরে। কীরকম অদ্ভুত লাগে। কাকতালীয় ভাবে দেওয়াল ঘড়িটাও বন্ধ। ব্যাটারি শেষ। এই ঘরে এখন সময় অতিবাহিত হচ্ছে না। একটা প্রাচীন সময়ে বাস করছি আমি। এখন এখানে কেউ আসবে না। কেউ না। যেখানে সব থেমে আছে, সেখানে আসাও যায় না। আমার ভয়ানক একা লাগে। একা। কেই বা এসেছিল সঙ্গে! কেই বা যাবে! শুধু আমিই আমার সাথে সারাজীবন থাকব। আমিই আমার বন্ধু। তবুও আমাদের বন্ধু প্রয়োজন। বান্ধবী প্রয়োজন। শরীর প্রয়োজন। শুধুমাত্র এই ক-টা সময়ের জন্য। কিন্তু আমার মতো যাদের সময় থমকে আছে?

হয়তো ঘর খুলে দেখা যাবে আমাদের বাড়িটা একটু হলেও বদলে গেছে ভবিষ্যতে, বাবা-মা'র আরও একটু বয়স বেড়েছে, আমাদের অবস্থার একটু উন্নতিও হয়েছে। নাহ! বরাবর এই বিষয়টা এসে লেখায় ব্যাঘাত ঘটায়। দারিদ্র্যের কথা বলতে আর ভাল লাগে না। নিজের কথা বলি। শুধু নিজের। আমার বয়স ২৪ বছরে আটকে গেছে। সেই একই জায়গায় আটকে আছি। আমার ডিগ্রি কমপ্লিট হল না। সবাই বড় হয়ে গেছে। বান্ধবীদের বয়স বেড়ে গেছে। ছোটবেলায় 'রিপ ভ্যান উইঙ্কল'এর গল্প পড়েছিলাম। আমার অবস্থা যদি ওরকমই হয়ে যায়? এই ঘরটা কি 'ক্যাটসকিল' পাহাড়ের মতো?

আমি কিন্তু খুব ভাল ছেলে। মেয়েদের বিশেষ পছন্দ করি না। অনেকের এরকম ধারণা আছে শুনেছি। বিশেষত আমার কিছু বান্ধবীদেরই। কেউ আসলে ঠিক মতো চেনে না। চেনার চেষ্টাও করতে দিই না। নাটক করতাম তো একসময়, তাই অনেক রকম ক্যারেক্টার মেইনটেইন করতে পারি। আমার মধ্যে অনেক মানুষ আছে। হ্যাঁ, অনেক। মেয়েদের আমার পছন্দ হয়। ঘন্টায়-ঘন্টায়, মিনিটে-মিনিটে পছন্দ হয়। রাস্তায় ঘাটে যেখানেই দেখি ছাই, উড়াইয়া দেখি তা-কিন্তু অমূল্য রতন আর মেলে না। ছাই ঘাটাই সার। এসব শুনে আমায় লম্পট ভাবতেই পারেন। আসলে, আমি আপনারই মতোরূপের উপাসক! তবে প্রত্যাখ্যানকে ভয় পাই, ভীষণ ভয়আর 'না' শব্দটিকে অপছন্দ করি। এইজন্যই ইহ জীবনে আমার প্রেম করাটা হল না। অথচ বন্ধুরা বলে, "একটা সলিড প্রেম করতো বস্! ঐ চশমা পরা মেয়েটাতো তোকে হেব্বি লাইক করে। গুলি চালিয়ে দে। আরে ফর টাইম পাস, খালি বেড রিলেশন।" পারি না। বিশ্বাস করুন, আমার এইসব শুনে কেমন যেন লাগে, কেমন একটা। কষ্ট হয়। যে আমায় পছন্দ করে, তাকে আমার হয় না, যাকে আমার পছন্দ, সে আবার... এটাই তো দুনিয়া। অথচ না বুঝি দুনিয়া, না বুঝি তোমায়।

তবে প্রেম লাগেই। নাহলে কবিতা লেখা যায় না। এটা আমি বিশ্বাস করি। শুধু কবিতা কেন, কোনও লেখাই আসে না। যখনই লিখতে পারি না, কোনও মেয়ের প্রেমে পড়ে যাই। ভীষণ ভাবে পড়ে যাই। ভুলতেই পারি না। শয়নে স্বপনে জাগরণে সে তখন বিরাজমান, আর তরতর করে লেখা এসে যায়।

অনেক সময় ভাবি, এইযে এতসব লেখা যে মেয়েটির জন্য লিখতে পারলাম, সে কোনওদিন জানবেই না? তাকে বলতে ইচ্ছা করে, এমনকি ভালবাসার কথাও। কিন্তু ঐযে বলেছি, আমি প্রত্যাখ্যানকে ভয় পাই, 'না' শব্দটিকে অপছন্দ করি। সেরকম যদি কেস ঘটে যায়? তবে তো আমার সাড়ে সর্বনাশ। আমার সাবকনশাসও আমায় ছেড়ে চলে যাবে। আমি ভীষণ কষ্ট পাব। ঘুম হবে না। ঘনঘন সিগারেট খেতে ইচ্ছে করবে... তবে একটা স্বভাব আমার ভাল, রাগ হোক - দুঃখ হোক, বাড়ির জিনিসপত্র ভাঙচুর করি না, নিজের হাত কাটি না, আসলে সেসব করতেও খুব ভয় লাগে। নিজেইতো নিজের এক ও অদ্বিতীয় বন্ধু, বন্ধুকে কি শারীরিক ভাবে আঘাত দেওয়া যায়? আর বাড়ির জিনিসপত্রের কথা বলে ফের দারিদ্র্যের কথা ভ্যাদাব না।

কত জটিল না মনটা? আচ্ছা আমি কি একটু অন্যধরনের? উহুঁ, আমি ডিপ্রেশনেও ভুগি না কিস্যু না। ব্লু হোয়েলের চক্করেও ঢুকিনি। ভয়। আত্মহত্যা নয়, আত্মরক্ষাই আমার পরম প্রিয় ভালবাসা।

এই বাসাটা মন্দ বাসা কি ভালবাসা তা জানি না। তবে এই বাসাতে এখন সময় থমকে আছে। আমি থমকে আছি। চায়ের কাপে যে পিঁপড়ে গুলো লেগেছিল তারাও। হ্যাঁ তারাও। আমি নিজের হাতে তাদের হত্যা করেছি। যে আরশোলাটা ঘুরঘুর করতে করতে দরজার তল দিয়ে বেড়িয়ে যেতে চেয়েছিল, সেও রেহাই পায়নি। এখানে কেউ আসবে না। এঘরেরও কেউ এখান থেকে যাবে না। আমার সাথে সব্বাইকে এখানে থাকতে হবে। এটাই আমার বাইবেল, আর এটাই আমার রাইফেল। না আমি বেরোব, না এ ঘরের কেউ। এমনকি আমার প্রিয় বেড়ালটা অবধি, খোলা জানালা পেয়ে ঢুকে পড়েছিল, চেয়ারের গদিতে কিছুক্ষণ শুয়ে আমার পায়ে মাথা ঘষে অনেক আদর জানাল। ও আমাকে খুব ভালবাসে, আমিও তো খুব ভালবাসি, তাই এই ঘর থেকে ওকেও বেরোতে দিইনি। গলার কাছে তিনটে আঁচড়ের দাগ আছে যদিও। সেও তো আমারই মতো, আত্মরক্ষা ভালবাসে।

জায়গাটা খুব জ্বলছে। কিন্তু এই সময়ের বাইরে বেরোতে পারব না। এঘরে ডেটল বা ঐ জাতীয় কিছুও নেই। শুধু একটা ইঞ্জেকশন রয়ে গেছে ড্রয়ারে। যখন ইনফেকশন হয়েছিল, তখনকার। একটা বেশি আনা হয়ে গেছিল। সযত্নে শরীরে ফুঁটিয়ে দিলাম। ভয় একটু লাগে। কিন্তু কী করব? বেঁচে তো আমাকে থাকতেই হবে। হয়তো সমস্ত পৃথিবীর আলো নিভে যাবে। একা আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। এই অতীত আমায় বাঁচিয়ে রাখবে। আচ্ছা এই ইঞ্জেকশনটা কার্যকরী হবে তো? অবশ্য যদি মনে প্রাণে বিশ্বাস রাখি, তবে হবেই। হতে বাধ্য। বিশ্বাসটাই বড় কথা। মনের জোরটাই সব।

বিড়ালটাকে দেওয়ালের ধারে টেনে এনে রাখলাম। ভোঁতা তবলার হাতুড়িটা আমাদের বাড়িতেই ছিল। এমনকি, সৌভাগ্যবশত, সেটা আমার ঘরেই এনে রেখেছিলাম। কাজে লেগে গেল। ওটাতেও একটু পরে পিঁপড়ে লাগবে। জানি। এবং তারাও আমার সাথে থাকবে। এই ঘরে। দুটো প্রজাপতিও ঢুকেছিলথাক, আর কত বলব এই গদগদ ভালবাসার কথা! শুনুন, দুটো চড়াইও আমায় ভালবেসে ভেন্টিলেটরে থেকে গেছে। বেঁচে বর্তেও আছে। আমি এখন জানালা বন্ধ করে দিয়েছি। আর কেউ এখান থেকে বেরোবে না।

ফেসবুক খুলতেও ইচ্ছে করছে না এখন। ওখানে সবাই আপডেটেড, আর আমি, বেকার - ব্যাকডেটেড। ২৪টা মেসেজ ইনবক্সে জমা হয়ে আছে। আমি কি উত্তর দিতে পারব? অতীত থেকে ভবিষ্যৎ বাণী কোনও মানুষ করতে পারে?

 

কলকাতায় একবার একটা ফুটব্রীজের ওপর রাত পৌনে এগারোটায় একজনকে দেখেছিলাম। রাস্তা থেকে। ছাতা মাথায়, কানে ফোন দিয়ে, রেলিংয়ে ঝুঁকে, কার সাথে যেন গল্প করছিল। বোধহয় প্রেমালাপ। পুরো পায়ের রক্ত মাথায় চড়ে গেল! আমার সাথে কেন কেউ এভাবে কথা বলে না?  বাবা একদিন বলেছিল, "বেশিক্ষণ কানে ফোন চেপে ধরে রাখা ঠিক নয়। ক্যান্সার হয়।" ভয় পেয়েছিলাম। আত্মরক্ষা। ফোন তাই পারতপক্ষে করি না আমি। কাউকে করতে দেখলেও, মাথার তার ছিঁড়ে যায়। সিড়ি দিয়ে হনহন করে উপরে উঠে লোকটাকে সাবধান করতে গিয়ে দেখি, আরে! এই শুকনো রাতে ও ছাতাই বা ধরে আছে কেন আর মোবাইলের বদলে একটা ভাঙা রিমোটই বা কানে চেপে আছে কেন? ও কি সন্ত্রাসবাদী? রিমোট দিয়ে কলকাতা উড়িয়ে দেবে? এমনিতেই বন্যায় এখানে আটকে পড়েছি। বাড়ি ফেরার ট্রেন লাইন - সড়কপথ সব ডুবে বসে আছে। তারমধ্যে এটাও যদিমাথার মধ্যে বিদ্যুৎ খেলে গেল আচমকা। জ্বরের মতো, গা গরম হয়ে উঠছে ধীরে ধীরে। চোখ-কান-মুখ থেকে যেন, আগুনের হলকা বেরোতে শুরু করল। রোবটের মতো এগিয়ে এলাম ওর কাছে। খুব কাছে। তারপর...

ফরেস্ট গাম্প সিনেমার পালকের মতো পড়ে যাচ্ছে লোকটা। তল দিয়ে যাওয়া শেষ ট্রামের ছাদে ওর মাথাটা বোধহয় ঠুকে গেছিল। একটা বিশ্রী শব্দ হল। ওতে একটু রক্ত দেখলাম কি? লোকটা ফাঁকা রাস্তায় চেদরে শুয়ে থাকল। আহ্! কী শান্তি!  হাইডোজের অ্যান্টিবায়োটিক চার্জ করলে যেরকম লাগে, সেরকম অনুভূতি হতে শুরু করল। শুধু আমরা নই, গোটা বাংলা রক্ষা করে নিজেকে নিজেরই চুমু খেতে ইচ্ছে হল। রাজার মতো শিস্ দিতে দিতে লজে ফিরে গেলাম। কাল হয়তো কাগজে শিরোনাম হবে,

 

 "জীবনানন্দ দাশের পরে এই প্রথম আরও একজন ট্রামে চাপা পড়ে–"

 

নাই বা জানল শহরবাসী কী মহৎ কাজ করেছি। বস্তুত মহৎ লোকেরা আড়ালেই থাকে, প্রচার চায় না। পরদিন কাগজে পড়েছিলাম,

"ট্রামে চাপা পড়ে পাগলের মৃত্যু। আত্মহত্যা? পুলিশ খুঁটিয়ে..."

 কত ভুল খবর। সন্ত্রাসবাদীকে পাগল বলে চালিয়ে দিল! 

কিংবা সেই লোকটা, যার দুকানে হেডফোন, প্রবল মাথা দুলাচ্ছে, যেন ঝিনচ্যাক মুন্নি বদনাম। অথচ সে যখন আমার দিকে ঘুরলো, দেখি হেডফোনের জ্যাকটা ওর মুখে। নিজের গান নিজেই শুনছে। আমার সাথে আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু ছিল। বলল, "পাগল।" পাগল? যে নিজের গান নিজে শোনে সে পাগল হয় কীকরে? বন্ধুর ওপর খুব রাগ হয়েছিল, সে অনেক চাঁদ আগের কথা। তখনও আমি আমার ঘরে আটকা পড়িনি। সময় আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।

আরও অতীতে মন চলে যাচ্ছে। তাই এতসব গল্প এসে গেল। মনের মধ্যে সাবকনশাস আর কনশাসের একটা খেলা চলছে প্রতিনিয়ত। সাইকোলজি ক্লাসে একবার শুনেছিলাম এই কথাটা। আজ কী যে হচ্ছে! আচ্ছা এই যে 'আজ' বললাম, আমি তো আর 'আজ' নামক সময়ে নেই! তাহলে? এটাও কি আমাদের সাবকনশাস থেকেই বেরিয়ে আসা?

মোবাইলের ব্যাটারিটা খুলে আবার লাগিয়েছি কালকে। দেখি সময় আরও পিছিয়ে গেছে। খালি পিছিয়ে যাচ্ছি। এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়?

''পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে ---"

রবীন্দ্রনাথ আমার মোবাইলে বাজছেন। কী টেলিপ্যাথির জোর! এই অতীতে বসেও আমি ভবিষ্যতের সাথে যোগাযোগ করে ফেলেছি। আমার মনের জোর অসম্ভব। যাকে আমি, আমার পরবর্তী কবিতা গুলো লেখার জন্য প্রেম করতে চেয়েছিলাম মনে মনে, সেই বান্ধবীই ফোন করেছে। কী আনন্দ! ওই ফোন আমায় রিসিভ করতেই হবে। ক্যানসারের ভয় পেলে চলবে না। কিন্তু ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে বোধহয় বেশিক্ষণ ফোন করা যায় না। সময় যে দৌড়চ্ছে সেখানে, রিঙেরও ডিউরেশন কমে যায়। ফোন কেটে গেল। রাগ হল। ভীষণ রাগ। রেগে যাওয়া শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। জানি। তবুও... এরপর ঘুণপোকার মতো মোবাইলে ভাইব্রেশন হল। একটা মেসেজ :

 

 "তোর বাড়িতে একটু যাব। অনেকদিন তোর ঘরটাতে যাই না। জানিসই বই আমার খুব প্রিয়। তোর ঘরটাতেও খুব শান্তি। আসছি।"

 

সে আসছে! আসছে তাহলে! কিন্তু আমি যে ওকে আসতে দিতে পারি না! পারব না। কিছুতেই না। এখানে কেউ আসবে না। আর যদি এসেই পড়ে, তাহলে ঐ পিঁপড়ে - আরশোলা - বেড়াল - প্রজাপতিনা না না, আমি ভাবতে পারছি না। কিচ্ছু ভাবতে পারছি না। কিন্তু ওকে আসতে বারণ করি কী করে? প্রচণ্ড ভয় হচ্ছে। ও যদি এসে পড়ে? আর দরজা ধাক্কায়? ওকে কি ভিতরে নিয়ে আসব? আর তারপর... না না নাআপনারা, যারা এতক্ষন ধরে এই লেখাটা পড়ছেন, তারা প্লিজ আমার একটা কথা রাখুন। ওকে এখানে আসতে বাঁধা দিন। প্লিজ। ওকে আমি কিছুতেই আসতে দিতে পারি না। এখানে সময় থেমে আছে। এখানে কেউ আসে না। ওকে আটকান। বাইরে কার পায়ের শব্দ হচ্ছে না? ও কি চলে এল? আপনারা শুনতে পাচ্ছেন? ওকে কেউ আটকাচ্ছেন না কেন? হ্যালো টেস্টিং... হ্যালো টেস্টিং ওয়ান-টু-থ্রী-ফোর... শুনুন, ওকে থামান দয়া করে। কলিং বেল বাজার আগেই ওকে থামিয়ে দিন। নয়তো আমি দরজা খুলে ফেলব, আর তারপর...

 

 

 

©রঙ্গন রায়

সংশ্লিষ্ট পোস্ট

সোয়েটার
অবিন সেন

সোয়েটার

গন গনে নীল শিখা মেলে গ্যাসের উনুন জ্বলছে। কেটলিতে জল সেই কখন থেকে ফুটে চলেছে। বাষ্প হয়ে অর্ধেক জল মরে গেছে। সেই দিকে কোনও খেয়াল নেই নীলার। সে একটা বেতের গদি মোড়া আরাম চেয়ারে বসে আছে। কিচেনটা ঢের বড়। প্রায় প্রমাণ সাইজ একটা ঘরের মতো। এখানে বসে উলের কাঁটায় শব্দ তুলে সোয়েটার বুনে যাওয়া তার একমাত্র বিলাসিতা। শীতের দিনে আগুনের এই উত্তাপটা কী যে আরামের, নীলা তা কাউকে বোঝাতে পারবে না। গ্যাসটা কতক্ষণ জ্বলছে সে দিকে তার কোনও খেয়াল নেই। চায়ের জল বসানোটা আসলে একটা ছুতো। শীতের রাতে আগুনের উষ্ণতাকে সে প্রাণ ভরে উপভোগ করে নিচ্ছে। গ্যাস পুড়ছে পুড়ুক। সেই নিয়ে সে মাথা ঘামায় না। তার স্বামী বিপুলের টাকার অভাব নেই। তারা বিশাল ধনী না হতে পারে কিন্তু এই সব সামান্য বে-হিসেবী খরচ করার মতো তাদের ঢের পয়সা আছে।

গল্প৭ মে, ২০২৪
অবনী বাড়ি আছো
পার্থসারথী লাহিড়ী

অবনী বাড়ি আছো

“আধেকলীন হৃদয়ে দূরগামী ব্যথার মাঝে ঘুমিয় পড়ি আমি সহসা শুনি রাতের কড়ানাড়া ‘অবনী বাড়ি আছ?”

গল্প৭ মে, ২০২৪
সঙ্গে লেডিস আছে
সত্যম ভট্টাচার্য

সঙ্গে লেডিস আছে

খ্যাঁচ করে বাসটা ব্রেক চাপতেই লোকজন সব পেছন থেকে একবারে হুমড়ি খেয়ে গায়ে পড়লো তৃষানের গায়ে আর তাতেই ওর চটকাটা গেলো ভেঙে। মুখ দিয়ে দু একটা ব কারন্ত শব্দ বেরিয়ে এসেছিলো আর একটু হলেই কিন্তু ঠিক তখনই তৃষানের মনে পড়লো এসব কিচ্ছু বলা যাবে না আজ কারণ সঙ্গে লেডিস আছে।

গল্প৭ মে, ২০২৪